নতুন মায়ের ৮ যত্ন
২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৪:১৬ এএম | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৪:১৬ এএম
জন্মের পর নবজাতকের যেমন যত্নের দরকার, তেমনই নতুন মায়েরও একটু বাড়তি যত্ন জরুরি। কেননা এ সময় মায়ের সুস্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে নবজাতকের সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠা। স্তন্যদানকারী মায়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য কিছু পরামর্শ—
-
সঠিক ও সুষম খাদ্য: আমাদের দেশীয় খাবারগুলো পর্যাপ্ত পুষ্টিগুণে ভরপুর। স্তন্যদানকারী মায়েদের প্রধান চিন্তা হলো, সন্তান পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পাচ্ছে কি না। তাই মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধির জন্য সবুজ শাকপাতা, মেথি ও তিলসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলসসমৃদ্ধ শস্যজাতীয় খাবারও এ সময়ে মায়েদের জন্য উপকারী।
-
পর্যাপ্ত বিশ্রাম: নতুন মায়েদেরও সন্তান ঘুমানোর সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা ঘুমিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। যেহেতু শিশুকে বারবার খাওয়ানোর জন্য রাতে মায়েরা ভালো করে ঘুমাতে পারেন না, তাই দিনের বেলায় ছোট ছোট ন্যাপ নেওয়া উচিত। এতে ক্লান্তি দূর হবে, মনমেজাজ ভালো থাকবে। তবে সব সময় হয়তো সেই পরিবেশ থাকে না। বাড়ির অন্যদের এই দিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
-
নিজেকে হাইড্রেটেড রাখা: পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ উৎপাদন করার অন্যতম উপায় হলো নিজেকে সব সময় হাইড্রেটেড রাখা। সাধারণ পানির পাশাপাশি ডাবের পানি, ফলের রস বা বিভিন্ন ভেষজ চা শরীরের পানিশূন্যতা দূর করে। তবে অতিরিক্ত চা-কফি, অর্থাৎ ক্যাফেইন–সমৃদ্ধ পানীয় আবার ঘুমে ও দুধ উৎপাদনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।
-
শারীরিক যত্ন: নিজের স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতায় মনোযোগ দেওয়া নতুন মায়েদের জন্য জরুরি। বিশেষত এ সময়ে সংক্রামক রোগ এড়াতে স্তন ও বুকের আশপাশের জায়গাগুলো বারবার শুষ্ক ও পরিষ্কার রাখা উচিত। এ ছাড়া দিনে দু-একবার যোগ বা অল্প সময়ের জন্য ব্যায়াম করলে মানসিক অবসাদ ও শরীরের ম্যাজম্যাজ ভাব থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
-
পরিবারের সাহায্য: শিশু বা আপনার প্রয়োজনে অবশ্যই পরিবারের সদস্যদের সাহায্য চাইতে পারেন। বাড়ির বড় বা অভিজ্ঞ কারও সঙ্গে আপনার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করতে পারেন। বর্তমান সময়ে অনেক সাপোর্টিভ গ্রুপ বা কমিউনিটি আছে, যেখানে অনেক নার্সিং বিশেষজ্ঞ আপনার সমস্যার আলোকে বিভিন্ন উপদেশ দিয়ে থাকেন। এসব অভিজ্ঞ লোকজনের সঙ্গে যুক্ত থাকলে নতুন মায়েরা মানসিকভাবে অনেক স্বস্তি পান।
-
মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব: শিশুর জন্মের পরপরই (পোস্টপার্টাম পিরিয়ডে) মায়ের দেহের হরমোনজনিত অনেক পরিবর্তন হয়, যা মানসিকভাবে তাঁকে ধীরে ধীরে আক্রান্ত করে। শিশুর জন্মের পরের সময়টা অনেক গুরুত্ব দিয়ে পার করতে হবে। বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, বাড়ির সবাই নবজাতককে নিয়েই ব্যস্ত, তাই আপনার মানসিক যত্ন আপনাকেই নিতে হবে। মানসিকভাবে চনমনে থাকতে ধ্যান বা যোগ ভালো উপায়।
-
প্রচলিত রীতিনীতি: প্রথাসিদ্ধ রীতিনীতি, যেমন সকালের সুবাতাস ও আলো গায়ে লাগানো, বিকেলে কিছুক্ষণ হাঁটা, বাড়িতে হলুদ বা ঘি দিয়ে রান্না করা খাবার খাওয়া, গরম খাবার খাওয়া, সঠিক সময়ে খাওয়া—এসব মেনে চলার চেষ্টা করুন। প্রথাগত এসব নিয়মের সুফল আছে বলেই এখনো টিকে আছে। আর নতুন মা ও শিশুর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য এসব মেনে চলা ভালো।
-
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: আমাদের দেশের বেশির ভাগ প্রসূতি সন্তান জন্মের আগে বা পরে রক্তশূন্যতায় ভোগেন। এ কারণে শিশুর জন্য পর্যাপ্ত দুধ উৎপাদন করতে পারেন না। তাই অবস্থা বেশি বেগতিক হওয়ার আগেই গাইনি বা ল্যাক্টাশন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এতে মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে যায়।